নিজেকে পরিবর্তন করার ৫টি ইফেক্টিভ উপায়

Rate this post

আমাদের জীবনের মহামূল্যবান সময়কে নষ্ট করার পরে যখন বুঝতে পারি এখন আর এসব নয়, এখন নিজেকে পরিবর্তন করা উচিত আর তখনই আমরা নিজেকে পরিবর্তন করার উপায় সম্পর্কে জানার জন্য হন্য হয়ে অনলাইনে খোঁজাখুঁজি করতে থাকি কিভাবে নিজেকে পরিবর্তন করা যায়।

আদৌ কি আপনার এই দুই-এক দিনের খোঁজাখুঁজিতে আপনি নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলতে পারবে?

কখনোই পারবেন না।

তাহলে এখন উপায় কি?

উপায় তো অবশ্যই আছে। এপর্যন্ত যা ভুল করার করে ফেলেছেন, এটা নিয়ে আর চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। আপনি মনস্ত যখন করেই নিয়েছেন আমি সফল হতে চাই, কিছু করতে চাই, জীবনে সফল হতে চাইলে করনীয় একটাই আর তা হলো আজকের পর থেকে আপনাকে সময় নষ্ট করা বন্ধ করে দিতে হবে।

নিজেকে পরিবর্তন করার ৫টি উপায়

হুট করে চাইলেও কখনো নিজেকে বদলে ফেলা যায় না। এর জন্য আপনাকে সময় দিতে হবে, সময় নির্ধারণ করে নিতে হবে। সঠিক সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা করে আপনাকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। হয়তো ভাবছেন কিভাবে তা করবেন।

এছাড়াও পড়ুন: ডিজিটাল মার্কেটিং কি? সম্পর্কিত একটি কমপ্লিট গাইডলাইন

আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি নিজেকে তৈরি করার ৫টি উপায় সম্পর্কে। যা আপনাকে আপনার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ও নিজের লাইফে পরিবর্তন নিয়ে আসতে সহযোগিতা করবে।

১। লক্ষ নির্ধারণ করুন

আপনি নিজেকে কেন পরিবর্তন করতে চান, কি জন্য পরিবর্তন করতে চান তা নিশ্চিত করুন এবং নোট করে ফেলুন আপনাকে কেনো পরিবর্তন করা উচিত, কি কি পরিবর্তন করা উচিত। আপনি যদি বুঝতে না পারেন কেন আপনাকে পরিবর্তন করা উচিত তাহলে কখনোই নিজেকে পরিবর্তন করতে পারবেন না।

লক্ষ্য বিহীন কখনোই আপনি আপনার সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছাতে পারবেন না। এর জন্য নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করা খুবই ইম্পোর্টেন্ট।

আপনার লক্ষ্য যদি হয় লাইফে ভালো কিছু করা, ভালো একটা জব, বিসিএস ক্যাডার হওয়া, ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। আপনি চাইলেই কি রাতারাতি এগুলো করে বলতে পারবেন? তা কখনোই কিন্তু পারবেন না।

আপনার জীবনে কিছু করতে চাওয়া এই লং টাইম লক্ষ গুলোকে ছোট ছোট করে ভাগ করে ফেলুন। এর জন্য ৩দিনের একটা নোট করে ফেলুন। এই তিন দিনে আপনি কি কি করবেন তা লিস্ট করুন। কত ঘন্টা পড়াশোনা করবেন, কত ঘন্টা খেলাধুলা করবেন, কত ঘন্টা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেবেন, কত ঘন্টা ফেসবুকিং করবেন, কত ঘন্টা ইউটিউবিং করবেন ইত্যাদি ইত্যাদি।

তিনদিন পর আপনি আপনার রেজাল্ট দেখুন আপনি কি কি করতে পেরেছেন, কি কি করতে পারেননি, কতটুকু সময় নষ্ট করেছেন ইত্যাদি সবকিছু ট্রাক করুন।

এছাড়াও পড়ুন: ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কিভাবে শুরু করবেন?

এই তিন দিনের রেজাল্ট এর উপর ভিত্তি করে আবার একটি সাত দিনের নোট করে ফেলুন এবং তিন দিনের রেজাল্টে থাকা ভুলগুলো যেনো আর সাত দিনের প্লানে না হয় সেই চেষ্টা করুন।

এভাবে ১০ দিনের প্লান করুন, ১৫ দিনের প্লান করুন, ২১ দিনের প্লান করুন, এক মাসের প্লান করুন। এভাবে সময়ের সাথে নিজেকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করতে থাকুন যতদিন না আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারছেন।

নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সব থেকে ইফেক্টিভ উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো- দৈনিকদিনের রুটিন করে নেওয়া।

এছাড়াও পড়ুন: কীভাবে আপনার দক্ষতাকে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং এ পরিণত করবেন

আগামী দিন কি কাজ করবেন তা ঘুমানোর আগে নোট করে ফেলা এবং সেই অনুযায়ী পরের দিন ঘুম থেকে উঠে ঘুমাতে যাওয়ার আগে মুহুর্ত পযর্ন্ত সেই রুটিন মাপিক কাজ করে যাওয়া।

দিনশেষে আজকে সারাদিন রুটিন মাফিক কতটুকুন চলতে পেরেছেন তা লিখে ফেলা এবং আবার আগামী দিন যেন এই ভুলগুলো না হয় সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া।

২। ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে চলুন

আপনি আপনার ধর্মীয় রীতিনীতি গুলোকে মেনে চলুন। আপনি যদি একজন মুসলিম হয়ে থাকেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন এবং পাশাপাশি ইসলামিক বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে আপনি অনেক সহানুশীল হতে পারবেন। নিজের সবকিছুতে অনেক যত্নশীল হয়ে উঠতে পারবেন।

“তাসাউফ ও আত্মশুদ্ধি” এই বইটি পড়ার মাধ্যমে ইসলামিক বই পড়া শুরু করে দিতে পারেন। এই বইয়ের প্রতিটি কথা যেন আপনার জন্য লেখা হয়েছে আপনার সাথে মিলে যাচ্ছে এমনটাই মনে হবে।

৩। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহারে সতর্ক হওয়া

সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারে আসক্ত হয়ে না পরা। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলো এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যেখানে আপনি এক মিনিট স্ক্রোলিং এর কথা বলে নিজের অজানতেই ঘন্টার পর ঘন্টা সময় পার করে দিচ্ছেন বুঝেও যেনো বুঝে আসছে না। এতে করে আপনার জীবন থেকে সময় অতিবাহীত হয়ে হচ্ছে যে সময়টা আপনি কাজে লাগাতে পারছেন না। অতএব সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ব্যবহারে সতর্ক হওয়া।

৪। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা

আত্মউন্নয়নমূলক বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে আপনি কোনোকিছু করতে এনার্জি পাবেন। হয়তো ভাবছেন কোন বইটি পড়ার মাধ্যমে বই পড়া শুরু করা যেতে পারে।

আমি বলবো আপনি “দ্যা আলকেমিস্ট” বইটি পড়ার মাধ্যমে আপনার বই পড়া শুরু করে দিতে পারেন। এই বইতে এক রাখাল বালক কে নিয়ে লেখা হয়েছে। এই বইতে সেই রাখাল বালকের ছোটবেলা থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত তার জীবনে অনেককিছু ঘটে যায়। এই বইটি আপনাকে অনেক মোটিভেট করবে যা না পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন না।

এছাড়াও আপনি “রিচ ড্যাড পুওর ড্যাড” বইটি পড়ে নিতে পারেন। এতে করে আপনি মৃত ব্যয় করা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন।

৫। অজুহাত দেখানো বন্ধ করুন

নিজেকে সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে যেতে যা করতে হবে তাই করুন। অজুহাত দেখানো থেকে বিরত থাকুন। আমার এটা নেই, সেটা নেই বলে নিজের হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা যাবে না। যা আছে তা দিয়েই শুরু করে দিতে হবে এবং যা প্রয়োজন তা ম্যানেজ করে ফেলার ব্যবস্থা কি ফেলতে হবে।

শেষকথা

কাল থেকে শুরু করবো বলে বসে থাকা যাবে না। আজকেই শুরু করে দিতে হবে এবং এখন থেকে শুরু করে দিতে হবে। আজকের একটা মিনিট কালকের দিনে কিন্তু কখনোই ফিরে আসবে না। অতএব আজকেই শুরু করুন এবং এখন থেকেই শুরু করুন।

Leave a Comment